Wellcome to National Portal
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

মোঃ রেজাউল করিম চৌধুরী

মোঃ রেজাউল করিম চৌধুরী

মেয়র, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন

 

বংশ পরিচিতি

চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও থানার প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী জমিদার বহরদার পরিবারের কৃতী সন্তান মোঃ রেজাউল করিম চৌধুরী। ১৯৫৩ সালের ৩১ মে পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা হারুন আর রশিদ চৌধুরী ও মাতা সামশুন নাহার চৌধুরীর ঘরে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।

বহরদার পরিবারের পূর্বপুরুষেরা সুদূর ইয়েমেন হতে ব্যবসা ও ধর্ম  প্রচারের উদ্দেশ্যে এদেশে আসেন। তৎকালীন সময়ে জাহাজের সমষ্টিকে বহর বলা হতো আর জাহাজের মালিককে বলা হতো বহরদার । নামেই পরিবারটির ধনাঢ্য হওয়ারই প্রমাণ মেলে। ধর্ম  প্রচারের পাশাপাশি ধনাঢ্য পরিবারটি মানবসেবার ব্রত নিয়ে চট্টগ্রাম হতে কক্সবাজার পর্যন্ত অসংখ্য মাদ্রাসা, মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন তন্মধ্যে মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন ২৩ টি এবং বেশকিছু পুকুর ও দিঘী খনন করেন।

মোঃ রেজাউল করিম চৌধুরীর পিতামহ ছালেহ আহমদ চৌধুরী বৃটিশ ও পাকিস্তান শাসনামলের স্বনামধন্য  আইনজীবি। এছাড়া পরিবারটি এমন সব আলোকিত মানুষের জন্ম দিয়েছে যারা দেশ ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে।

শিক্ষাজীবন:

পরিবারের প্রতিষ্ঠিত পূর্ব ষোলশহর প্রাথমিক বিদ্যালয়েই শিক্ষাজীবন শুরু করেন মোঃ রেজাউল করিম চৌধুরী। এরপর সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয় হতে মাধ্যমিক, চট্টগ্রাম কলেজ হতে উচ্চ মাধ্যমিক এবং সর্বশেষ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হতে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন।    

রাজনৈতিক জীবন:

মোঃ রেজাউল করিম চৌধুরীর রয়েছে বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন। আইন বিষয়ে অধ্যয়নকালীন সময়ে নৃশংসভাবে সপরিবারে শাহাদাত বরণ করেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। জাতির পিতার হত্যার প্রতিশোধ নিতে বই, খাতা রেখে প্রতিরোধের ময়দানে নামেন মোঃ রেজাউল করিম চৌধুরী। ১৯৬৭ সালে গণ অভ্যূথানের সূচনালগ্নে ছাত্রলীগে যোগদান করেন। ১৯৬৯-৭০ সালে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব লাভ করেন। ১৯৭০-৭১ সালের ভয়ঙ্কর ঝঞ্জাক্ষুদ্ধ সময়ে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন এবং অসম সাহসিকতায় ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর আহবানে সাড়া দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। দূর্দান্ত সাংগঠনিক দক্ষতার সাথে ১৯৭২-৭৬ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এই সময়ে তিনি পর্যায়ক্রমে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সদস্য, দপ্তর সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৬-৭৮ সাল পর্যন্ত উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন । ১৯৭৮-৭৯ সালে উত্তর জেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮০ সালে চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের নির্বাহী সদস্য এবং ১৯৮২ সালে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্যপদ লাভ করেন। ১৯৯৭-২০০৬ সাল পর্যন্ত মহানগর আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ও ২০০৬-২০১৪ সাল পর্যন্ত একই সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদকের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।

মোঃ রেজাউল করিম চৌধুরী ২৭ জানুয়ারি ২০২১ খ্রিস্টাব্দ তারিখে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ৬ষ্ঠ পরিষদের নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন। তিনি ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ খ্রিস্টাব্দ তারিখে শপথ গ্রহণ করেন এবং ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ খ্রিস্টাব্দ তারিখে সুধী সমাবেশ আয়োজনের মাধ্যমে মেয়র দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। 

মানবসেবা ও শিক্ষা ক্ষেত্রে অবদান:

পারিবারিক ঐতিহ্য ধারণ করে মোঃ রেজাউল করিম চৌধুরী আধুনিক ও কর্মমুখী পেশাগত শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে গড়ে তোলেন সামশুন নাহার হারুন পলিটেকনিক ইনষ্টিটিউট ও সামশুন নাহার হারুন টেকনিক্যাল ট্রেনিং ইনষ্টিটিউট। এছাড়াও তিনি চান্দগাঁও এনএমসি উচ্চ বিদ্যালয়, পূর্ব ষোলশহর ওয়াছিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া মাদ্রাসা ও বহরদারবাড়ি শাহী জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতির দায়িত্বে আছেন।

সৃশনশীল ও মননের পরিচর্যা:

সৃজনশীল কাজের প্রতি মোঃ রেজাউল করিম চৌধুরী অত্যন্ত যত্নশীল। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি প্রচুর লেখাপড়া করেন। নিজস্ব স্বকীয়তায় ও আয়োজনে ১৯৭২ সালে প্রকাশ করেন ‘অযুত কন্ঠ’ নামক প্রকাশনা। সামরিক জান্তার রক্তচুক্ষকে তোয়াক্কা না করে ১৯৭৬ সালে প্রকাশ করেন ”সূর্যপথ” নামে প্রতিবাদী পত্রিকা এবং নিয়মিত পাক্ষিক “বারুদ” সম্পাদনাও করেন তিনি। এছাড়া পত্র-পত্রিকায় নিয়মিত লেখালেখি করেন তিনি।

তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থ:

১। জামাত-শিবিরের হিংস্রতা ও ধর্মীয় রাজনীতি- প্রকাশকাল ১৯৮৩ সাল

২। কালোটাকা নির্ভর রুগ্ন রাজনীতি থেকে মুক্ত হতে হবে- প্রকাশকাল ২০১৪ সাল

৩। ছাত্রলীগ ষাটের দশকে চট্টগ্রাম-প্রকাশকাল ২০১৬ সাল

৪। স্বদেশের রাজনীতি ও ঘরের শত্রু বিভীষণ -প্রকাশকাল ২০১৮ সাল

 পরিবার:

অভিজাত, সর্বংসহা, বিদুষী সেলিমা আক্তার তাঁর যোগ্য অর্ধাঙ্গিনী। দু’টি মেয়ে ও একটি ছেলে রয়েছে মোঃ রেজাউল করিম চৌধুরী ও সেলিমা আক্তার দম্পতির। বড় মেয়ে তানজিনা শারমিন নিপুন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, তিনি বৃত্তি নিয়ে মালয়েশিয়ায় পিএইচডি করেছেন। দ্বিতীয় মেয়ে সাবিহা তাসনিম তানিম এমবিএ করছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হতে আর ছোট ও একমাত্র ছেলে ইমরান রেজা চৌধুরী কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার।

 উপরের এক ঝলক পরিচিতি থেকেই বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ রেজাইল করিম চৌধুরী’র রাজনৈতিক শুদ্ধাচার, লড়াই, ত্যাগ, পারিবারিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষা, মানবসেবা ও উদারতা সম্পর্কে জানা যায়। এটা বলা বাহুল্য হবে না চলমান ঘোলা রাজনীতিতেও মোঃ রেজাউল করিম চৌধুরী একজন উল্টো ও স্বচ্ছ স্রোতের নিরহঙ্কার, সাহসী অভিযাত্রী।